দশ হাজারারের মধ্যে ওয়ালটন তাদের চমৎকার কিছু ডিভাইস বাজারে বেশ সাড়া ফেলেছে। প্রিমো আর৬ ম্যাক্স এর পড়ে এবার বাজারে চলে এলো প্রিমো আর৬, তবে ১০ হাজারের টাকার ভিতরে আরেকটি সেরা স্মার্টফোন হওয়ার অপেক্ষা রাখে প্রিমো আর৬। সাম্প্রতিক আর৬ ম্যাক্স এর দাম ১০ হাজার টাকার কাছাকাছি ১০৯৯৯ টাকা হলেও, এবার প্রিমো আর৬ এর রেগুলার দাম রাখা হয়েছে ৯৫৯৯ টাকা।
এক নজরে প্রিমো আর ৬ঃ
- ডুয়াল 4G স্ট্যান্ডবাই
- অ্যান্ড্রয়েড ৯.০ পাই
- ১.৬ গিগাহার্জ অক্টা-কোর প্রসেসর
- ৩ জিবি DDR4 র্যাম; ৩২ জিবি রম
- ১৫.৫ সে.মি.(৬.১”) ১৯ঃ৯ HD+ আইপিএস ‘NOTCH’ ডিসপ্লে
- (১৩+২) মেগাপিক্সেল ডুয়েল রিয়ার ক্যামেরা
- ৮ মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরা
- ফেস-আনলক, ফিংগারপ্রিন্ট স্ক্যানার
- ৪,০০০ মিলি অ্যাম্পেয়ার ব্যাটারি
- অনলাইন থিম, জেসচার ন্যাভিগেশন, ওটিজি, ওটিএ আপডেটের সুবিধাসহ আরও অনেক কিছু।
বক্স এর ভেতর যা যা থাকছেঃ
- প্রিমো আর৬ ডিভাইসটি
- চার্জিং আড্যাপ্টার
- ইউএসবি চার্জিং ক্যাবল
- সিম ইজেক্টর পিন
- একটি হেডফোন
- ইউজার ম্যানুয়াল এবং সেফটি ইন্সট্রাকশন
অপারেটিং সিস্টেম
ইউজার ইন্টারফেস
[envira-gallery id=”1921″]
ডিসপ্লে ও ডিজাইন
প্রিমো আর৬ এ পাওয়া যাবে ১৯ঃ৯ রেসিও সম্পন্ন (২.৫ডি কার্ভড) ৬.০৯ ইঞ্চি ফুলভিউ আইপিএস ডিসপ্লে। যার রেজুলেসন ১৫২০*৭২০ পিক্সেল, যার কারনে একে বলা হচ্ছে এইচডি প্লাস ডিসপ্লে। আর এর উপরে থাকছে একটি টপ ‘ইউ বা ডট’ নচ। যে নচের ভেতর আমরা পাব একটি ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা সেন্সর। ক্যামেরা সেন্সর এর উপরেই দেখা মিলবে ফ্রন্ট ইয়ারপিসের।
বাজারে ফোনটি পাওয়া যাচ্ছে তিনটি আকর্ষণীয় কালারে যেগুলো হচ্ছে ক্রিমসন ডার্ক ; যা কালোর মধ্যে অনেকটা খয়েরি ভাব, টুলাইট ব্লু (জেনারেল নীল কালারের মতই, নিচে একটু গ্র্যাডিয়েন্ট ফিনিস) এবং ডার্ক ব্লু। আর কোন কালারই কোনটির থেকে কম নয়। তবে আমার মতে আপনাদের ক্রিমসন ব্ল্যাক এবং ডার্ক ব্লু বেশি ভালো লাগবে আশা করি।
এর ব্যাক তথা রিয়ার প্যানেলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরটি হাতের পৌঁছানোর সুবিধা হবে, এমন একটি মাঝামাঝি স্থানে আছে। আর ডুয়াল ক্যামেরা মডিউল একটি ফ্ল্যাশ এর সাথে একদম ভারটিক্যাল ভাবে অবস্থান করছে; সব কিছু মিলিয়ে ডিজাইনকে দামের হিসেবে অনেকটা প্রিমিয়ামই মনে হবে আপনার কাছে। ফোনটির প্রসস্থতা ৭৩.৫ মিলিমিটার এবং উচ্চতা ১৫৫.৬ মিলিমিটার। এর পুরুত্ব ৮.৮৫ মিলিমিটার। ব্যাটারি সহ প্রিমো আর৬ এর ওজন মাত্র ১৬৪ গ্রাম।
ক্যামেরা
এটিই স্মার্টফোনটির অনেক আকর্ষণীয় একটি বিষয়, আর অনেকের প্রথম পছন্দও হতে পারে স্মার্টফোনটির ডুয়াল ক্যামেরা ফিচার। স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে সাধারণত দু’প্রকার ক্যামেরা সেন্সর হয়, সিমোস এবং বিএসআই। আর বিএসআই সেন্সর যুক্ত ক্যামেরার লো লাইট পারফর্মেন্স অনেক বেশি ভালো হয় সিমোস এর তুলনায়। আর এই প্রিমো আর৬ এর রিয়ার এবং ফ্রন্ট দু’পাশেই থাকছে বিএসআই ক্যামেরা সেন্সর।
ক্যামেরার লেন্সের ফোকাল লেন্থ এর অপর এর ছবির মান অনেকটা নির্ভর করে থাকে। এই ফোকাল লেন্থকে প্রকাশ করা হয় এপারচার দ্বারা। এপারচার নাম্বার যত ছোটো হবে ক্যামেরার ওপেনিং তত বড় হবে। আর এই ফোনটির ডুয়াল ক্যামেরা মডিউলে আপনি পাচ্ছেন এপারচার এফ২.০। যা আপনাকে অবজেক্টকে তুলনামূলক ভালো ফোকাস পয়েন্টে রেখে খুব দারুন কিছু ছবি তুলতে সহায়তা করবে। এর এপারচার এফ২.০ আপানাকে ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার করতে অনেক সুবিধা দিবে।
অনেক ফোনে লেন্স এর বেপারটা খুব ভালোভাবে দেখা হয়না, তবে ভাল মানের লেন্স কিন্তু ছবিকে ক্লিয়ার ভাবে উপস্থাপন করার মাধ্যমে কোয়ালিটিকে কিছু গুনে বাড়িয়ে দিতে পারে। প্রিমো আর৬ ডিভাইসটির এই রিয়ার ক্যামেরা মডিউলে আপনি পাচ্ছেন ৫পি লেন্স, যা আপনার জন্য আরেকটি প্লাস পয়েন্ট।
ফ্রন্ট প্যানেলে সেলফি এবং সেলফ/ভিডিও কলিং এর জন্য পাচ্ছেন ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। এর স্পেশাল ফিচার হিসেবেও থাকছে ৪পি ক্যামেরা লেন্স, মিররড সেলফি, ফেস ডিটেকশন ইত্যাদি। সেলফি লাভারদের জন্য এটি সত্যিই এই দামে অনেক বড় প্লাস পয়েন্ট।
ক্যামেরা ইউ আই
[envira-gallery id=”1926″]
হার্ডওয়্যার
একটি স্মার্টফোন এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে তাতে সিস্টেম হার্ডওয়্যার হিসেবে কি বিদ্যমান। ভালো বিল্ড কোয়ালিটি আউটপুট-ইনপুট হার্ডওয়্যার এবং ভালো সিস্টেম হার্ডওয়্যার একটি স্মার্টফোনকে আদর্শ স্মার্টফোনে পরিণত করে। আর এসব মিলে নির্ভর করে স্মার্টফোনটি গেমিং এবং মাল্টিটাস্কিং এর জন্য কতোটা ভালো হবে। রিয়েল গেমিং এক্সপেরিয়েন্স হিসেবে বলতে গেলে প্রিমো আর৬ স্মার্টফোনটিতে আপনি হালের জনপ্রিয় যেসব গেমস রয়েছে; পাবজি, অ্যাস্পল্ট ৯ এগুলো অনায়াসে খেলতে পারবেন। আর এর ভেতর পাবজি খেলার জন্য যারা ১০ হাজার টাকার মধ্যে নতুন স্মার্টফোন খুঁজছেন, তারা এই প্রিমো আর৬ বাছাই করতে পারেন। পাবজি এর পাশাপাশি ফ্রিফায়ার গেমটি আরও বেশি স্মুথলি খেলা যাবে, যদিও পাবজিই সবার প্রথম টার্গেট সেটি খেলতে পারবেন সমস্যা হবে না।
ফোনটিতে থাকছে করটেক্স-এ৫৫ অক্টাকোর ১.৬ গিগাহার্জ প্রসেসর। আর এই অক্টাকোর প্রসেসর এর সাথে এতে গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট হিসেবে পাবেন পাওয়ারভিআর জিই৮৩২২ জিপিইউ। এর অন্যতম আকর্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে, এতে পাওয়া যাবে ডিডিআর৪ ৩ জিবি র্যাম। আর ইন্টারনাল স্টোরেজ হিসেবে এতে পাওয়া যাবে ৩২ জিবি জায়গা।
এই সম্পূর্ণ সিপিইউ এবং মেমোরি এর সার্বিক পারফর্মেন্স আমরা ডিভাইসটির বেঞ্চমার্ক স্কোর থেকেই যাচাই করতে পাচ্ছি। ফোনটির এনটুটু বেঞ্চমারক স্কোর এসেছে ৭২৬৪১। গিক বেঞ্চ অ্যাপে সিঙ্গেল কোরে ১৪৮ এবং মাল্টি কোরে এসেছে ৭৯৯। সুতরাং স্কোর থেকে এর ক্ষমতা সম্পর্কে ধারনা আচ করতে পারছি নিশ্চয়ই।
বেঞ্চমার্ক
[envira-gallery id=”1935″]
স্পেশাল ফিচার
স্ক্রিন রেকর্ডঃ স্মার্টফোনটির ভেতর আপনি বিল্ট ইন স্ক্রিন ভিডিও ক্যাপচার সুবিধা পাবেন। স্ক্রিন রেকর্ড করার জন্য আপনাকে আর আলাদা করে কোন অ্যাপ ইন্সটল করতে হচ্ছে না।
স্মার্ট কন্ট্রোলঃ স্মার্টফোনটির ভেতর আপনি বেশ কিছু স্পেশাল ফিচারস পাবেন। যেমন স্মার্টফোনটি হাত দিয়ে তুললে আপনি টাইম নোটিফিকেশন ইত্যাদি সব দেখতে পাবেন।
স্মার্ট মোশনঃ নম্বর টাইপ করে ডায়াল বাটন না চাপ দিলেও হবে, ফোন কানের কাছে নিলেই কল ডায়াল হয়ে যাবে। একই ভাবে কোন কল আসলে আপনি কানের কাছে ফোন নিয়ে গেলে অটোম্যাটিক কল রিসিভ হবে।
ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরঃ সিকিউরিটির জন্য আপনি এই ফোনের সাথে পাচ্ছেন একটি মোটামোটি ভালো রেসপন্স সম্পন্ন ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর।
ফেস আইডিঃ স্মার্টফোনটিতে আপনি ২ডি ফেস আনলক সুবিধা পাবেন।
ডিজিটাল ওয়েলবিয়িং: আপনার দৈনন্দিন কার্যবিধি কে ট্র্যাক করার জন্য এই স্মার্টফোনের ভেতর থাকছে একটি বিশেষ ফিচার। আর যার নাম হচ্ছে ডিজিটাল ওয়েলবিয়িং। আর এই ডিজিটাল ওয়েলবিয়িং ডেভেলপ করেছে গুগল। আর প্রিমো এস৭ ডিভাইসে এটি একটি স্পেশাল ফিচার হিসেবে থাকছে।
ওয়ারেন্টি
ওয়ালটন এর অন্যসব ফোনের মতই এতে পাওয়া যাবে রিপ্লেসমেন্ট এবং ওয়ারেন্টি সুবিধা।
Discussion about this post